সিলেটে নৌকার মাঝি হচ্ছেন যারা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে সিলেট বিভাগে কারা মনোনয়ন পাচ্ছেন বা নৌকার মাঝি কারা হচ্ছেন, সেই সিদ্ধান্ত হবে শনিবার। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড সেদিনই সিলেটসহ সারাদেশে নৌকার মাঝিদের নাম প্রকাশ করবে। তবে দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর সাথে আলাপকালে যে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সিলেটের ৬টি আসনে খুব একটা অপ্রত্যাশিত বা নাটকীয় কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ার সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে। যেখানে যে যেমন আছেন, তেমনটা থেকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী বলে মনে করছে সূত্রগুলো। তবে সিলেট জেলার ৬টি আসনের মধ্যে অন্তত একটি আসনে নতুন মুখ দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। আর সেটা হচ্ছে সিলেট-৫ জকিগঞ্জ-কানাইঘাট আসন।আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর মতে, সিলেট-১ (সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর) আসনে নির্বাচন করতে অনেকেই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও বর্তমান সাংসদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের বিকল্প হিসাবে তেমন কোনো প্রার্থীই দেখা যাচ্ছেনা। যদিও এ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন ও সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।সিলেট-২ ( বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর) আসনটি জোট রাজনীতির বলি হয়েছিলো গত দুই মেয়াদে। এ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীই দেয়া হয়নি। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীকেই এ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিচ্ছে বলে প্রায় নিশ্চিত দলীয় সূত্রগুলো।সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা- ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) আসনেও অনেক শক্তিশালী মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল ও বর্তমান সাংসদ, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। বছর দু’য়েক আগে উপনির্বাচনে জীয় হয়ে সংসদে যাওয়ার পর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে কিছুটা বিতর্কিত হয়ে পড়েলও এ আসনে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ হাবিবুর রহমান হাবিবকেই বেছে নিতে পারে বলেও ধারনা দলটির সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের।সিলেট- ৪ (কোম্পানীগঞ্জ-জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট) আসনের বর্তমান সাংসদ প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এ আসনে তিনি বারবার নির্বাচিত এমপি। এবারও নতুন আরও প্রচুর মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ইমরান আহমদের উপরই আস্তা রাখছে।এবার অবশ্য চমক থাকছে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে। এ আসনের বর্তমান এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার। তিনি একজন বর্ষিয়ান আওয়ামী লীগ নেতা। এর আগেও একবার তিনি এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে বয়সের কারণে এবার তার পরিবর্তে দলটি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদকে বেছে নিচ্ছে বলে প্রায় নিশ্চিত নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো।সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে তেমন কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছেনা। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ ৪ মেয়াদে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এরমধ্যে ২ মেয়াদে সরকারের প্রভাশালী শিক্ষামন্ত্রীও ছিলেন। নির্বাচনী এলাকায় তার উন্নয়ন তৎপরতা নিয়ে অসন্তোষ থাকলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তাকেই আবার দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলোর ধারনা।সূত্রগুলো জানিয়েছে, সিলেটে নৌকার মাঝি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে এরাই। তবে শেষ মুহুর্তে কোনো নাটকীয় সিদ্ধান্ত হলেও হতে পারে।