শিকল খুলে পালিয়ে গেলেন ভারত, ফেরত দিল বিএসএফ

ভারতের মেঘালয় শিলংযের একটি সেভহোমে থাকা বাংলাদেশী নাগরিকক লিল চন্দ্র শিলকে (১৭) তামাবিল ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশের নিকট ভারতীয় বিএসএফ ও ডাউকি ইমিগ্রেশন পুলিশ হস্থান্তর করেন। 

বাংলাদেশী নাগরিক লিল চন্দ্র শিল (১৭) কানাইঘাট উপজেলার দর্পন নগর গ্রামের শ্রী শিপন চন্দ্র শিলের ছেলে। বিগত ২ থেকে ৩ বছর থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন থাকা অবস্থায় অনুমান ৫/৬ মাস পূর্বে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে জানা যায় লিল চন্দ্র শিল সে ভারতের শিলংএ রয়েছে। তার পিতা বিষয়টি সিলেটের ব্র্যাক মাইগ্রেশনকে অবগত করলে ব্র্র্যাকের সহয়তায় শিশুটি ভারতের শিলং-এ অবস্থানরত একটি শিশু সেভহোমে আটক থাকার তথ্য নিশ্চিত করা হয়।  এই সংক্রান্ত সংবাদ সিলেটের ব্র্যাক মাইগ্রেশনের কর্মকর্তারা ইম্পালস এনজিও নেটওয়ার্ক ভারত নজরে দেয় পরে ভারতের আসামের গুয়াহাটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার মি.রুহুল আমিন সহ হাই কমিশনের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক ভাবে শিলং সেভহোমে থাকা শিশুর বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাই করে দেশে আসার ট্রাভেল পারমিট পাস প্রদান করা হয়।  ডাউকি ইমিগ্রেশন পুলিশ স্থানীয় বিজিবি ও বিএসএফ’ সহ শিশু’টির পিতা পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তাকে তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশের (ইনচার্জ) রুনু মিয়ার নিকট হস্তান্তর করা হয়। 

লিল চন্দের পিতা শিপন চন্দ বলেন, আমার ছেলে গত দুই তিন বছর ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ, তাকে পায়ে শিকল দিয়ে বেধে রাখতে হয়। না হয় সে পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, জুলাই মাসে পায়ের শিকল খুলে সে পালিয়ে যায়, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায় নি। ১৭-১৮ দিন পর একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বলে আমার ছেলে ভারতের মেঘালয়ে আছে। পিতা সিপন চন্দ পেশায় একজন নাপিত, ছেলে হারিয়ে গত চার পাঁচ মাস থেকে হাতে কাচি দরতে পারছিলেন না। বাসায় রান্নাও হয় নি ঠিক মতো, উচ্চ রক্তচাপে ভোগা মা বিগত কয়েক মাস খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করছিলেন। লিল চন্দ শিল বাংলাদেশে প্রবেশ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। 

তিনি জানান জাফলং জিরো পয়েন্ট দিয়ে কাজের জন্য ভারতের আসামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিললো সে। পরে তিনি বৈধ কাগজপত্র না থাকায় ভারতীয় পুলিশের কাছে সে আটক হয়। আটকের সময় বয়স ১৮ এর কম হওয়ায় লিল চন্দকে আদালতের নির্দেশে নিউ শিলং বয়েজ অবজারভেশন হোমে আটক রাখা হয়। সেখানকার কর্মকর্তা জোসেফাইন সুমার বলেন লিল চন্দ শিল মানসিকভাবে সুস্থ নন, তিনি আমাদের কেন্দ্র থেকেও একবার পালিয়ে গিয়েছিলেন। আজ আদালতের নির্দেশে আমরা তাকে বাংলাদেশে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলাম।

হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন তামাবিল ইমিগ্রেশন পুলিশ চেক পোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনু মিয়া, ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের এম.আর.এস.সি কোর্ডিনেটর শুভাশীষ দেবনাথ ও ইম্পাললের পক্ষ থেকে জোনাথান, পুলিশ কর্মকর্তা সানাউল হক রমজান, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি নূরুল ইসলাম সদস্য শোয়েব উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।