সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনের সতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী সাধারণ ভোটারদের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। রবিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি জকিগঞ্জ উপজেলার ফুলতলা গ্রামের ফুলতলী মাদরাসা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন।
সকাল ৮টা থেকে সিলেটের ৬টি আসনের ১ হাজার ১৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। টানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এ আসেন নৌকার প্রার্থী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দীন আহমদ ও সতন্ত্র প্রার্থী সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহমদ আল কবির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন।
এ নির্বাচনে সিলেটের ১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১০৫ প্রার্থী। জেলায় ৩৫ জন। বিএনপি না থাকায় সিলেটের বেশিরভাগ আসনে নৌকার প্রার্থী জয়ী হবে। কয়েকটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে হবে লড়াই। তবে এসব প্রার্থীও বেশিরভাগ আওয়ামী লীগ নেতা, ভোটে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্রের ব্যানারে। সিলেটে ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী মাঠে রয়েছে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনস্থ স্ট্রাইকিং টিমও মাঠে কাজ করছে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে মোট ২৭ লাখ ১৫ হাজার ৩৩১ ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৩ লাখ ৯২ হাজার ৩৯৫ ও মহিলা ভোটার রয়েছেন ১৩ লাখ ২২ হাজার ৯২৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১০ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে এক হাজার ১৩টি ও ভোট কক্ষ রয়েছে ছয় হাজার ছয়টি।জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সিলেট জেলার ছয়টি সংসদীয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর ২৭ প্লাটুন সদস্য। এর বাইরে বিজিবি সদস্য ১ হাজার ৪০০ জন, ৬ হাজার ২১৯ জন পুলিশ সদস্য, র্যাব সদস্য ১১৪ জন ও ১২ হাজার ২৮৬ জন আনসার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মোট ২২ হাজার সদস্য সার্বক্ষণিক মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। সিলেট মহানগর এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য মোতায়েন থাকবে।জেলার মোট ভোটকেন্দ্রের মধ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় ২০৬টি ও জেলার মধ্যে ৪৪৭ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষায় এসব কেন্দ্রকে বলা হয় অতিগুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্র। ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসার মিলে ১৮ জন আর সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ-আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে থাকবেন পুলিশ ২ জন, আনসার (পিসি) ১ জন, আনসার (এপিসি) ১ জন, পুরুষ আনসার ৬ জন ও ৪ জন মহিলা আনসার।জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান সিলেটভিউ-কে বলেন- সিলেটের ৬টি আসনে ভোটগ্রহণ অবাধ, নির্বিঘ্ন ও সুষ্ঠু করতে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে। আশা করি বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন।
গত ১৫ নভেম্বর ঘোষিত হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল। সিলেট জেলার ৬টি আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৫৮ জন। পরে জমা দেন ৪৭ জন। যাচাই-বাছাই শেষে ৩৩ জনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে উচ্চ আদালতে আপিল করে আরও দুজন প্রার্থিতা ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। এ দুজনসহ সিলেটের ৬টি আসনে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে। তবে ৩ জানুয়ারি সিলেট-৫ আসনের জাতীয় পার্টিার প্রার্থী সাব্বির আহমদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং সিলেট-৩ আসনের ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী ক্বারি মাওলানা মইনুল ইসলাম আশরাফী ওই আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ায় লড়াইয়ের তালিকায় নাম অবশিষ্ট থাকলে ৩৩ জন।
মন্তব্য