সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তবে এর দায় নির্বাচন কমিশনের উপর পড়বে। আমরা আইনানুগ পর্যায়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাই। তাই এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোনো রকমের পক্ষপাতিত্ব করা হলে আমরা তা মেনে নেবো না।’
বুধবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস, পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান, বিজিবি ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায় লে. কর্ণেল মাকসুদুল আলম, র্যাব-৯ এর কোম্পানি কামান্ডার ফয়সল আহমেদ, সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শরিফুল ইসলাম, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুরাদ আহমেদ, নিরাপত্তা পরিদর্শক আবুল হোসাইন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহাদাত হোসেন চৌধুরী আরো বলেন, ‘আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। একটি প্রধান দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি, এজন্য ভোটের সংখ্যা কম হতে পারে। প্রার্থী হিসেবে যারা আছেন তারা কোন দলের তা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। প্রত্যেকই সচেতন নাগরিক হিসেবে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিতে না পারি সেক্ষেত্রে ভোটারদের একটি অনাস্থা তৈরি হবে যেটা কারো জন্যই মঙ্গলময় হবে না। আমরা চাই না কোনো প্রার্থী বা ভোটারের জানমালের ক্ষতি হোক। ’
তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন কমিশনের পর্যাপ্ত জনবল নেই সুতরাং এই নির্বাচন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমাদের নির্ভর হতে হয় প্রশাসন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্কুল কলেজের শিক্ষকদের উপর। সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি একটি অবাধ নিরপেক্ষ এবং আইনানুগ নির্বাচন পরিচালনার জন্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। কোনো নির্বাচনে পূর্ব রাত্রে ভোট বাক্সে ব্যালট ভরে দেওয়া, ভোটের দিনে ও ভোট গণনার সময় কোনোরকম অনিয়ম হলে আমরা তা সাথে সাথে প্রতিহত করবো। এই ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। সাধারণ ভোটাররা যেনো শান্তিতে নির্বিঘেœ ভোট প্রদান করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ যদি ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান না করতে পারেন তাহলে সেটা হবে আমাদের জন্য লজ্জার।’
তিনি বলেন, ‘যদি নির্বাচনের আগের রাতে কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে ওই কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। তাছাড়া ভোটের দিন সামান্য অনিয়ম হলে সেই কেন্দ্রেও নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হবে। কোনো রকম চাপের মুখে পড়ে কাজ করা যাবে না। কেউ যদি মনে করেন নির্বাচনের চাপ গ্রহণ করতে পারবেন না তারা আমাদের জানান, আমরা আপনাদের নির্বাচন থেকে অব্যাহতি প্রদান করবো।’
পরে সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ‘আমরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। নির্বাচনের সরঞ্জাম ব্যলট পেপার পৌঁছে দেওয়া হবে নির্দিষ্ট সময়ে। তাছাড়া সুনামগঞ্জের ১০টি উপজেলাকে আমরা ২ ভাগে ভাগ করেছি। প্রথম ভাগে ছাতক, দোয়ারাবাজার, দিরাই, তাহিরপুর, ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. মুরাদ আহমেদ এবং দ্বিতীয় ভাগে সুনামগঞ্জ সদর, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা, শাল্লা উপজেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলামকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা আশাবাদী, সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।
মন্তব্য