সিন্ডিকেটের কবলে সিলেট রেলস্টেশন

জাবেদ এমরান : কাউন্টার শূন্য, টিকেটে সয়লাব কালোবাজার ।দেশের সিমান্তবর্তী ও প্রবাসী অধ্যুষিত শহর সিলেট। উন্নত জীবনধারণের জন্য বংশানুক্রমিক সূত্রে বিভাগের অর্ধেকের বেশির ভাগ মানুষ যুগের পর যুগ প্রবাসে রয়েছেন। আর সে সুযোগে সিলেটে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও বিভিন্ন ব্যবসার সাথে জরিত একচতুর্থাংশ লোকজন সিলেটের বাহিরের। এ সব মানুষ বিভিন্ন দিবসের ছুটিতে পরিবার পরিজনদের টানে ছুঁটে যান পৈতৃক এলাকায়। ছুটি কাটিয়ে পুনরায় ফিরেন নিজ কর্মস্থলে। অধিকাংশ স্ব-পরিবারে ভ্রমন করেন ট্রেনে। এদিকে, প্রতিদিন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে যেমন পর্যটকরা ছুটে আসেন তেমনি সুফি দরবেশের নগরী হওয়ায় মুসলমান সহ অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরা সিলেটে ভীড় করেন। এ সব পর্যটকদের যাতায়াতের প্রধান বাহন ট্রেন। নিরাপদ ও আনন্দদায়ক ভ্রমনের জন্য দেশের মানুষের প্রথম পছন্দ এই ট্রেন। জনগনের চাহিদা, সুযোগসুবিধার কথা মাথায় রেখে সরকার সিলেট-ঢাকা-চট্রগ্রাম রোডে আন্তঃনগর একাদিক ট্রেন চালু করে। সিলেট-ঢাকা রুটে জয়ন্তিকা, পারাবত, উপবন, কালনী এক্সপ্রেস এই চারটি ও সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উদয়ন ও পাহাড়িকা নামে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে নিয়মিতভাবে। আর অভ্যন্তরীণ রোডে চলাচল করছে একাদিক লোকাল ট্রেন। ঈদ পার্বণ ছাড়াও ট্রেনের টিকেটের জন্য মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বেশিরভাগ সময় দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘান্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সোনার হরিণক্ষেত ট্রেনের টিকেটের দেখা পান না। একমাত্র ক্ষমতাশালীরা কাউন্টার থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে টিকেট পান। প্রতিদিন শত শত টিকেট ছেড়ে দেয়া হয় কালোবাজারে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুনাফা লোভী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের টিকেট বন্টনের নিজস্ব কৌটা রয়েছে। সেখান থেকে কালোবাজারিদের হাতে টিকেট সহজে চলে যায়। আন্তঃনগর ট্রেনে প্রতিদিন অতিরিক্ত বগি লাগানো হয়। এই বগির অর্ধেকের বেশি টিকেটও আগে ছাড়া হয় কালোবাজারে। বাকী অল্প সংখ্যক টিকেট ছাড়া হয় ট্রেন যাত্রার দিন কাউন্টারে। বুঝানো হয় কাউন্টার থেকেই সব টিকেট বিক্রি হয়। দীর্ঘ লাইনে যারা আগে থাকেন কেবল তারা টিকেট পেলেও বাকিরা শূন্য হাতে ফেরেন। কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে যাত্রীরা বাধ্য হয়ে দিগুণ মূল্য দিয়ে কালোবাজার থেকে টিকেট সংগ্রহ করেন। সিলেট থেকে প্রতিদিন চলাচলকারী ৬ ট্রেনের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টিকেটের ২ হাজারই যায় কালোবাজারে। টিকেটের কালোবাজার নিয়ন্ত্রণ করছে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি সিন্ডিকেট চক্র। সেই চক্রের গটফাদারদের কাছে অনেকটা জিম্মি রেলওয়ে স্টেশনের বর্তমান স্টেশনমাস্টার ও ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম। দুর্নীতিবাজ কর্তাদের লম্বা হাতের কারনে ম্যানেজার অনেকটা অসহায়। অধিক লাভের আশায় প্রতিদিন কালোবাজারে ছড়িয়ে থাকা অধিকাংশ টিকেট অবিকৃত রয়ে যায়। সেটা পড়ে সরকারের ঘাড়ে। আর সে কারনে বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনছে রেল মন্ত্রনালয়। আগামীতে দেখুন- কারা নিয়ন্ত্রণ করে টিকেটের কালোবাজার ভিডিও সহ