হবিগঞ্জে বিয়ে না করায় ধর্ষণের অভিযোগে প্রেমিক কারাগারে!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:হবিগঞ্জ শহরে প্রেমিকার জন্মদিনে গভীর রাতে আমোদফুর্তি করার সময় প্রেমিক যুগলকে হাতেনাতে ধরেছে প্রেমিকার পরিবার। অবশেষে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও প্রেমিক রাজী না হওয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে শায়েস্তানগর ব্র্যাক অফিসের নিকটবর্তি একটি বাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়েছে। সুত্র জানায়, পইল ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী নুর জাহান বেগমের পুত্র ও মাধবপুর উপজেলার বহরা গ্রামের নুর উদ্দিনের হবিগঞ্জ সরকারী বৃন্দাবন কলেজের এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র শাহরিয়ার চৌধুরী নাদিম (২২) এর সাথে ৩ বছর আগে সদর উপজেলার পাঁচপাড়িয়া গ্রামের ও শায়েস্তানগর এলাকার ভাড়াটিয়া মো. আব্দুল জলিলের স্বামী পরিত্যাক্তা কন্যা তাসলিমা আক্তার মনির (২৪) ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একজন আরেকজনকে কাছে পেতে মরিয়া হয়ে উঠে। সুযোগ বুঝে তারা নানা সময় বিভিন্ন স্থানে আমোদফুর্তিতে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে মনি নাদিমকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে শুরু করে। কিন্তু মনি তালাকপাপ্ত হওয়ায় নাদিমের পরিবার তা মেনে নেয়নি। তাই নাদিমকে আটকানোর জন্য মনির পরিবার ‘ফাঁদ’ তৈরি করে। শনিবার মনির জন্মদিন উপলক্ষে রাতে নাদিমকে আমন্ত্রণ করে। সে সাড়া দিয়ে জন্মদিনে এসে খাবার শেষে সুযোগ বুঝে আমোদফুর্তিতে লিপ্ত হয়। এসময় পূর্ব পরিকল্পীতভাবে প্রস্তুত থাকা লোকজন তাকে আটক করে নাদিমকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে তার অভিভাবককে খবর দেয়। তারা এসে তালাকপ্রাপ্ত মেয়েকে ঘরে তুলতে রাজি না হলে সদর থানায় খবর দেয়া হয়। তখন এসআই আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমিক যুগলকে থানায় নিয়ে আসে। আজ রোববার সারাদিন উভয় পক্ষের অভিভাবকরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও মনিকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মনি বাদী হয়ে সদর থানায় নাদিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। রোববার বিকালে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে প্রেমিক যুগলকে আদালতে প্রেরণ করলে সেখানে একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তখন আদালত মনির জবানবন্দী রেখে তার নিজ জিন্মায় মুক্তি দেন এবং নাদিমকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। নাদিম আক্ষেপ করে বলে, ‘৩ বছরের সম্পর্ক যা হয়েছে দু’জনের মতামতের ভিত্তিতেই হয়েছে। কিন্তু সে আমাকে ছলনা করে ফাঁসিয়েছে। আমি বলেছিলাম যেহেতু আমার পরিবার বিয়েতে রাজি না তাই আমি লেখাপড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে তোমাকে বিয়ে করব। কিন্তু সে সুযোগ আমাকে দিল না। ইতিপূর্বে মনি আরও বেপরোয়া চলা-ফেরা করত। কিন্তু আমি তাকে সৎ পথে ফিরিয়ে এনেছি’। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রহিম জানান, স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। তবে সমাধান না হওয়ায় মনির অভিযোগে ধর্ষণের মামলা ঋজু করে প্রেমিক যুগলকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালত তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।