মায়ের দাবি আবরার হত্যায় ইশতিয়াক নির্দোষ

বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নার শাস্তি মেনে নিতে পারেননি তার মা কুলসুমা খাতুন (শেলী)। তার দাবি হত্যাকাণ্ডের সময় বাড়িতে একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে ছিল মুন্না। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান তিনি।

দুই বছর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২০ জনকে মত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত; পাঁচজনকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

এ মামলায় অভিযুক্ত ২৫ আসামির সবাইকে দোষী সাবস্ত করে ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক আবু জাফর কামরুজ্জামান বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।

এর মধ্যে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ইশতিয়াক আহমেদ মুন্নারও যাবজ্জীবন সাজা দেন আদালত।

ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের ঘরগাও গ্রামের আব্দুল আহাদ ও কুলসুমা খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষে ছাত্র।

বুধবার রাতে মোবাইল ফোনে মুন্নার মা কুলসুমা খাতুন শেলী বলেন, আবরার হত্যার সময় আমার ছেলে বাড়িতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে ছিল। হত্যার সাথে জড়িত থাকলে আমি নিজেই তার ফাঁসির দাবি করতাম।

মুন্নার বাবা আহাদ ছিলেন ইউপি মেম্বার। ২০০৯ সালে ২৬ জানুয়ারি তিনি মারা যান। রেখে যান তিন পুত্র সন্তান। বড় ছেলে ক্যাপ্টেন আশফাক আহমেদ মনির বর্তমানে সিলেট সেনানিবাসে কর্মরত। ছোট ছেলে ইফতেখার আহমেদ রানা সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইসি ৩য় বর্ষের ছাত্র।

কুলসুমা খাতুন জানান, স্বামীর মৃত্যুর কিছুদিন পর তিনি ব্রাহ্মণ বাড়িয়া জেলার সাতবর্গ গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান। সেখানে মাহবুবুর রশীদ জহির নামে এক ব্যবসায়ীর সাথে তার বিয়ে হয়। ওই ঘরে উম্মে হাবিবা রাহা নামে এক কন্যা রয়েছে। সে ক্লাস ওয়ানের ছাত্রী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মুন্না এ প্লাস পেয়ে ২০১৩ সালে এসএসসি পাশ করে। এরপর সে ঢাকা ক্যামব্রিয়ান কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। ওই পরীক্ষায়ও সে ‘এ প্লাস’ পেয়েছিল।

বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র মুন্না ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল না জানিয়ে তিনি বলেন, ওইদিন প্রতিবেশী রাসেল নামে এক ব্যাংকারের বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য বাড়িতে ছিল। ৬ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে বাড়ি থেকে এনা বাসে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ভোর সোয়া চারটার দিকে শেরেবাংলা হোস্টেলে পৌছে। সকাল ১০টার দিকে মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, রায় শুনার পর মুন্নার সাথে আধামিনিট আলাপ করতে পেরেছি। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে শুধু দোয়া করতে বলেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান বর্তমানে কুলসুমা খাতুন।