বাহুবলে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

হবিগঞ্জের বাহুবলে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক সুদীপ্ত দাশ এ দণ্ডাদেশ দেন।অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুজনকে বেকসুল খালাস দেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জেলার বাহুবল উপজেলার লাকুড়ীপাড়া গ্রামের সৈয়দ জিতু মিয়ার ছেলে সৈয়দ হেলাল মিয়া (২৪)। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন একই গ্রামের সৈয়দ জিতু মিয়ার স্ত্রী সৈয়দা শাহেদা খাতুন ও আব্দুর রহমানের ছেলে তাজুল ইসলাম। 

বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল হাসিম চৌধুরী মোল্লা মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাহুবল উপজেলার বড়গাও গ্রামের আব্দুল হামিদ চৌধুরীর মেয়ে লাভলী আক্তারকে বিয়ে করেন একই উপজেলার লাকড়ীপাড়া গ্রামের সৈয়দ হেলাল মিয়া। বিয়ের কিছু দিন পর এক লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করেন। যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যা করে। পরে লাশ ফেলে বাড়ি থেকে চলে যায় স্বামীসহ বাড়ির লোকজন। পরের দিন লাভলী আক্তার অসুস্থ হয়ে মারা গেছে বলে বাবার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে তারা বাড়িতে এসে দেখতে পায় লাশের ঘায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনার পর ২৮ সেপ্টেম্বর লাভলীর বড় ভাই শাহীন চৌধুরী বাদী হয়ে স্বামীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর বাহুবল থানা পুলিশের তৎকালীন এসআই মহরম আলী তদন্ত করে তিনজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। আদালত রাষ্ট্র পক্ষের ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার আসামির উপস্থিতিতে এ দণ্ডাদেশ দেন। 

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকটে আফজল হোসেন জানান, এ রায়ে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি। আশা করি উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুর ইসলাম জানান, এ রায়ে আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। আশা করি উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পাব।