বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, হবিগঞ্জে বিনা উসকানিতে পুলিশ শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা, গুলিবর্ষণ করেছে। এর জন্য পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলী, ওসি মাসুক আলী ও নাজমুল হাসান দায়ী।
তিনি বলেন, শটগানের প্রায় ১২শ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। কারণ সারা বিশ্বে শটগানের গুলি ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গুলিতে বিএনপির ৩০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনার জন্য এসপি-ওসিকে অবিলম্বে অপসারণ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এ সময় হবিগঞ্জে দলের পূর্বঘোষিত সমাবেশে (বুধবার) পুলিশি হামলার কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।
আর গুলিবর্ষণ করে নেতাকর্মীদের আহত করার প্রতিবাদে শুক্রবার (আজ) সিলেট বিভাগের সব উপজেলায় এবং কাল শনিবার সব জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে চলমান আন্দোলনকে দমানো যাবে না বলে হুঁশিয়ার করে মির্জা ফখরুল বলেন, হবিগঞ্জে যে গুলিবর্ষণ হয়েছে, এর মূল কারণটাই ছিল ওই জেলায় বিএনপির একটা শক্তিশালী জায়গা আছে। সেখানকার বিএনপির নেতারা বরাবরই প্রমাণ করেছেন, সেখানে শক্তিশালী সংগঠন আছে। সেজন্য এ জায়গায় তারা আঘাত করেছে। এভাবে দমন-পীড়ন করে কখনোই জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তাকে বিদেশে পাঠানোর আন্দোলনকে দমন করা যাবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পুলিশের নির্বিচারে গুলি ও লাঠিপেটায় দলের ৩০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক শফিকুর ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজীব আহসান, যুগ্ম সম্পাদক সাইদুর রহমান ছাড়াও আবদুল মতিন, শেখ রাসেল, গোলাম বাকী চৌধুরী, মানিক মিয়া, তৌহিদুর রহমান, বেলাল আহমেদ, আসিফুল ইসলাম, মুজাক্কির ইমন, গৌর চন্দ্র দাশ, মোশায়েদ আলম রয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সাইদুর রহমানের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বুধবার সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে ৬টি জেলায় সমাবেশ কর্মসূচি ছিল। পাঁচটিতে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হয়েছে। অথচ তারা পরিকল্পিতভাবে কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে আজকে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণভাবে সংকুচিত করে ফেলেছে। তবে প্রতিটি কর্মসূচিতে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে সরকারের প্রতি মানুষ অনাস্থা প্রকাশ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ। সংবাদ সম্মেলনে হবিগঞ্জের সমাবেশে অংশ নেওয়া বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদিন ফারুক, মুক্তাদির চৌধুরী ও সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আখতার হামলার বর্ণনা দেন।
তাদের দাবি, হবিগঞ্জের সমাবেশের জনস্রোত ঠেকাতে স্থানীয় পুলিশ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। এর উদ্দেশ্য একটাই, সমাবেশ বানচাল করা। যেভাবে পুলিশ সেখানে গুলিবর্ষণ করেছে, এর ফল আরও ভয়াবহ হতে পারত।
মন্তব্য