হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে গত ২৭ ডিসেম্বর এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় ওই কিশোরীর কথিত প্রেমিক খলিল উদ্দিন (২০) ও তার সহযোগী গোলাম হোসেনকে (৫০)।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারাই ওই কিশোরীকে শ্বাসরোধ ও গলাকেটে হত্যা করেছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই।
বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন খলিল।
খলিল উপজেলার হরিনগর গ্রামের মিরাশ উদ্দিনের ছেলে। গ্রেপ্তার গোলাম হোসেন একই গ্রামের মৃত এরশাদ উল্ল্যাহর ছেলে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই’র উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আহাদ জানান, গত ২৭ ডিসেম্বর সকালে নবীগঞ্জ থানার বড় ভাকৈর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের বাগাউড়া এলাকায় জমিতে ওই কিশোরীর গলাকাটা ও হাত-পা বাঁধা মরদেহ পায় পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরদিন তার বাবা নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ২৯ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দেওয়া হয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসামি শনাক্ত করা হয়।
৩০ ডিসেম্বর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রেমিক খলিল উদ্দিন ও তার সহযোগী গোলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
উপ-পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল আহাদ জানান, কিশোরী ছদ্মনাম ব্যবহার করে খলিল উদ্দিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বেশ কয়েকবার তারা দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ওই কিশোরী তার অসুস্থতার কথা বলে খলিলের কাছে ২ হাজার টাকা ধার চায়। রাতে তাদের দেখা করে টাকা নেওয়ার কথা হয়। এরই মধ্যে সন্ধ্যায় গোলাম হোসেনের সঙ্গে দেখা হয় খলিলের। এসব কথা খলিল তাকে জানালে গোলামও তার সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। একপর্যায়ে রাতে ওই কিশোরী ও খলিল দেখা করে। এ সময় আড়ালে লুকিয়ে থাকে গোলাম হোসেন। এ দিনও দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয় খলিল ও ওই কিশোরী। পরে গোলাম হোসেনও কিশোরীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য বললে এতে অস্বীকৃতি জানায় সে। আর এতে করে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। প্রেমিক খলিলও কিশোরী মেলামেশা করার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তাতেও রাজি হয়নি কিশোরী। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে তারা পালিয়ে যায়।
মন্তব্য