জয়ের বীরত্বগাথা শতকের পরও পিছিয়ে বাংলাদেশ

‘আবার নতুন করে...’ প্রথম সেঞ্চুরি উদযাপনের পর আকাশে উড়তে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়কে এই বার্তা দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। কারণটা তো অজানা নয়, দক্ষিণ আফ্রিকার রানের কাছাকাছিও তখন যাওয়া হয়নি বাংলাদেশের।

অভিজ্ঞ মিরাজের কথা শুনেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি পাওয়া জয়। শেষ পর্যন্ত একা লড়াই করলেন। ১৩৭ রানের নজরকাড়া ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৩৬৭ রানের জবাব দিচ্ছিলেন। কিন্তু তার একার লড়াইয়ের পরও ২৯৮ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ।

ডারবানে প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানের লিড পায় প্রোটিয়ারা। শনিবার আলোক স্বল্পতা ও বৃষ্টির কারণে তৃতীয় দিনের খেলা পণ্ড হওয়ার আগে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনা উইকেটে তুলেছে ৬ রান। সব মিলিয়ে তাদের লিড ৭৫। নিশ্চিতভাবে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ।

তৃতীয় দিনের লড়াই পুরোটাই ছিল জয়কে ঘিরে। ৪৪ রানে দিন শুরু করা এ ব্যাটসম্যান অসাধারণ ব্যাটিংয়ে পেয়েছেন প্রথম টেস্ট শতক। ২১ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা, ধৈর্য, দৃঢ়চেতা মনোভাব ও লড়াইয়ের অসাধারণ নিদর্শন দেখিয়েছেন ২২ গজে।

লিটনের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৮২ রানের। লিটন ৪১ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরলেও মনোবল নড়বড়ে হয়নি। মিরাজকে সঙ্গী করে ডানহাতি ওপেনার তুলে নেন সেঞ্চুরি। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এশিয়ার ২২তম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি পেয়েছেন জয়। এর আগে ইয়াসির তার ইনিংসে যেন জল ঢেলে দিতে নিচ্ছিলেন। ফিল্ডারের হাতে বল রেখে দ্বিতীয় রান নেওয়ার জন্য ডাক দিয়ে দৌড়ে অপর প্রান্তে চলে আসেন। ভাগ্যিস ইয়াসিরের ডাকে সাড়া দেননি জয়। নয়তো রান আউট হয়ে ফিরতেন। মিরাজ (২৯) আউট হওয়ার পর আক্রমণ বাড়ান জয়।

পেসার উইলিয়ামসের এক ওভারে চার বাউন্ডারিতে ১৬ রান তোলেন। এর আগে হার্মারকে পরপর দুই চার হাঁকান মিড উইকেট দিয়ে। কিন্তু লেজের কোনো ব্যাটসম্যানই তাকে সহায়তা করতে পারেননি। খালেদ ও ইবাদতের রান ছিল শূন্য। অথচ দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ দুই উইকেটে ৬৯ রান তুলেছিল। জয় যখন আউট হন তখন ৬৯ রানেই পিছিয়ে বাংলাদেশ।

৩২৬ বলে ১৩৭ রানের বীরত্বগাথা ইনিংসটি সাজান জয়। ১৫ চার ও ২ ছক্কায় ছড়ান মুগ্ধতা। নিজের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, লড়াইয়ের তীব্র মনোভাব দেখিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে তাকে নিয়ে লম্বা সময়ের জন্য স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ। আপাতত এই টেস্টে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ম্যাচে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষ দুদিনে অভাবিত কিছু করতেই হবে অতিথিদের। এজন্য তাসকিন, মিরাজ, খালেদদের নিতে হবে বড় দায়িত্ব।