এক তরুণীকে নিয়ে ৬ বন্ধুর দ্বন্দ্বে খুন হন মতিন্দ্র

এক তরুণীকে নিয়ে ৬ বন্ধুর দ্বন্দ্বে খুন হন মতিন্দ্র

ছয় বন্ধু মিলে ভাড়া করেন এক তরুণীকে। এর পর কে আগে আর কে তরুণীকে সঙ্গ দেবেন এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে খুন হন মতিন্দ্র মালাকার (২৫) নামে এক যুবক।

হত্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় এমনই জবানবন্দি দিয়েছেন ঘাতক মধু মিয়া। মধু মিয়া হবিগঞ্জে চুনারুঘাট উপজেলার বড় বহুলা গ্রামের মৃত রশিদ মিয়ার ছেলে।

মধু মিয়া জানান, ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর ওই তরুণীকে এক রাতের জন্য ৫ হাজার টাকায় ৬ বন্ধু মিলে ভাড়া করেন।

এ সময় মধু মিয়া মতিন্দ্রকে খোয়াই নদীর পাড়ে আসতে বলেন। তারা সময়মতো সেই জায়গায় গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করবে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মধু মিয়া মতিন্দ্রকে দোকান থেকে ডেকে নেয় এবং তাদের সঙ্গী পাঁচজনকেও সঙ্গে নেওয়া হয়। এ সময় মতিন্দ্র তরুণীর জন্য টাকা কালেকশন করছিল। সবাই এক হাজার করে টাকা দিলেও মধুর নিকট টাকা ছিল না। মধু মিয়াকে তখন মতিন্দ্র গালি দেন। একপর্যায়ে মেয়েটিতে কে আগে সঙ্গ দেবে এ নিয়ে মতিন্দ্র ও মধুর মধ্যে তর্ক হলে ক্ষিপ্ত হয়ে মধু মিয়াকে মতিন্দ্র ঘুষি দেন। পরে মধু মিয়া গাছের ডাল দিয়ে মতিন্দ্রর মাথায় আঘাত করেন। এতে মতিন্দ্র মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

পরে মধুসহ তার সহযোগীরা মতিন্দ্রর লাশ সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের খোয়াই নদীর পূর্ব পাড়ে যমুনাঘাট নামক স্থানে নদীর পাড়ে রেখে পালিয়ে যান।

বুধবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জবানবন্দি প্রদান করেন মধু মিয়া। একই সঙ্গে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই তরুণীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। বিচারক আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করে মধু মিয়াকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর তদন্তসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাভিগাঁও কামাল মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া প্রকাশ সাদ্দাম (৩৭) ও পশ্চিম পীরেরগাও এলাকার মৃত সমুজ আলীর ছেলে ফিরুজ মিয়া (৪২), মৃত হাছন আলীর ছেলে জুনাব আলীকে (৪৫) গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন। এর মধ্যে বকুল মিয়া পলাতক রয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মস্তফা জানান, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর চুনারুঘাটে স্থানীয় লোকজন মতিন্দ্রর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে।

নিহত মতিন্দ্র মালাকার উপজেলার গাভীগাঁও গ্রামের মনোরঞ্জন মালাকারের ছেলে। এ ঘটনায় মতিন্দ্রর পিতা মনোরঞ্জন বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে চুনারুঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।