সিলেটে শামীমের খপ্পর থেকে মুক্তি চান নেহারুন বিবি

মাসে ২৫ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠার পর সেই বাসা দখলের জন্য এখন মালিকপক্ষকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নগরীর উপশহর এলাকার মৃত রফিক মাষ্টারের ছেলে শামীম ইকবালের বিরুদ্ধে। নিজেকে যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা পরিচয় দিয়ে তিনি নানান অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শাহপরান থানার উপশহর ডি ব্লকের, ২৬নং বাসার আব্দুল হাই সাজ্জাদের স্ত্রী নেহারুন বিবি (৬০)। তিনি তার পাঁচতলা বাসাকে শামীমের খপ্পর থেকে মুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার ( ২৭ মার্চ) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার বাসার ভাড়াটে শামীম ইকবালের কারণে আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তিনি ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ আমার বাসার নিচতলা মাসিক ২৫ হাজার টাকা ভাড়া ধার্য করে বাংলাদেশ ‘অটিজম গবেষণা ও প্রতিবন্ধী স্কুল’ সিলেট (বার্ডস) প্রতিষ্ঠা করেন। ওই সময়ে চুক্তি সম্পাদন সম্ভব না হওয়ায় পরে তা করতে তাগাদা দিলে তিনি নানা টালবাহানায় সময়ক্ষেপন করেন। আমার ছেলে লন্ডন থেকে ৩/৪ বার চুক্তির জন্য দেশে এলেও শামীম নানা অজুহাতে এড়িয়ে গেছেন। ভাড়া আদায় করতে না পারায় ২০২২ সালের নভেম্বরে আমি তাকে উকিল নোটিশ পাঠাই। কিন্তু এতেও তিনি ভ্রুক্ষেপ করেন নি। 

তিনি বলেন, শুধু বাসা ভাড়াই নয়। ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শামীম বিপদে পড়ে আমার কাছে ছুটে আসেন এবং ধার হিসাবে ৪০ হাজার টাকা চান। বকেয়া ভাড়াসহ ধারের টাকা একসাথে পরিশোধের আশ্বাস দেয়ায় কিছুটা ভয়ে এবং সরল মনে বিশ্বাস করে আমি তাকে ৪০ হাজার টাকা দেই। পরে বারবার তারিখ করলেও সে কোন টাকাই ফেরত দেননি।

নেহারুন বিবি আরো বলেন, বকেয়া আদায়ে আমি স্থানীয় মুরব্বিদের মাধ্যমে সালিশ বিচারের চেষ্টা করেছি। কিন্তু ধুর্ত শামীম কিছুতেই সালিশ মানেন না। তাছাড়া আমাকে ১৫ লাখ টাকার চেক দেয়ার দাবি করলেও সালিশানদের কাছে সে কোন প্রমাণ দিতে পারেন নি। 

গত ২২ মার্চ আবার টাকা চাইতে গেলে শামীম আমাকে কাজের মেয়ে ও ছেলের সামনে গালাগাল ও হত্যার হুমকি দেন। আমার কাজের মেয়ে তামান্নাকে দেখলে তিনি অশ্লীল কথাবার্তাও বলেন। এমনকি বাসার পাঁচতলার তার প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষিকার ভাড়া নেয়া ফ্লাটেও তিনি রাতযাপন করেন। সেখানে আরও বিভিন্ন অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলেছেন অন্যান্য ভাড়াটেরা। এ ব্যাপারে আমি শাহপরাণ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

তিনি তার ৫১ মাসের বকেয়া ভাড়া আদায় এবং শামীমের প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাদেশ অটিজম গবেষণা ও প্রতিবন্ধী স্কুল’ সিলেটকে (বার্ডস) তার বাসা থেকে সরিয়ে দিতে সিলেটের পুলিশ প্রশাসন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতৃবৃন্দসহ সচেতন সিলেটবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শামীম ইকবাল। তিনি সিলেট প্রতিদিনকে বলেন, আমি নিজে বাসাভাড়ার অগ্রিম বাবদ তাকে ১০ লাখ টাকা দিয়েছি। তার কাছে আমি মোট ১৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা পাই। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নেহারুন বিবি ঘড় ভাড়া না নেয়ায় আমি আদালতে নিয়মিত ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে রেন্ট কোর্টে আমার মামলা চলছে ( নং ১/২০২৩)