সিলেটের তরুণীর ফেসবুক হ্যাক করা সেই যুবক রিমান্ডে

রাজধানী ঢাকায় বসে সিলেটের এক তরুণীর ফেসবুক হ্যাক করে পরে তা উদ্ধার করে দিবে বলে টাকা আদায়ের অভিযোগে হ্যাকিং গ্রুপের সদস্য এক যুবককে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

সোমবার (২২ মে) রাজধানীর ডেমরা থানা এলাকা থেকে মোশারফ হোসেন আকিল (২০) নামের ঐ যুবককে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে হ্যাকিং এর একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে, সিলেট নগরীর মিরাবাজারের এক তরুণীর (১৯) ফেসবুক আইডি হ্যাক করে মুঠোফোনে টাকা দাবি করা হয়। ওই টাকা পাঠিয়েও হ্যাক হওয়া ফেসবুক আইডি ফেরত পাননি অভিযোগ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ওই তরুণীর বাবা।

ওই মামলায় মোশারফ হোসেন ওরফে অকিল নামের এক তরুণকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–১–এ নিয়ে তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। ওই আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তাঁর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মোশারফ হোসেন আকিল ঢাকার ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার মো. আলাউদ্দিনের ছেলে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই পলাশ চন্দ্র দাস বলেন, গ্রেপ্তার তরুণকে আদালতে নিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তিনি। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্র জানায়, মামলার এজাহারে পাওয়া মুঠোফোন নম্বরের সূত্র ধরে সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট প্রযুক্তির সহায়তায় মোশারফ হোসেন নামের ওই তরুণের অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর সোমবার সকালে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানে অংশ নেন সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। অভিযানে সহায়তা করে ডেমরা থানা–পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মোশারফ হোসেন একজন শিক্ষার্থী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন মানুষের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন।

সিলেটের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মোশারফ হোসেনকে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার একটি মুঠোফোন নম্বর দিয়ে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের জুলাই মাসে সিলেট নগরীর মিরাবাজার এলাকার ওই তরুণীর ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়। এরপর অপরিচিত এক তরুণ তাঁর মুঠোফোনে কল করেন। তিনি ফেসবুক আইডি ফেরত দেওয়ার কথা বলে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বরে তিন হাজার টাকা পাঠাতে বলেন।

এরপর দাবি অনুযায়ী টাকা পাঠান ওই তরুণী। কিন্তু ফেসবুক আইডি ফেরত না দিয়ে আরও ১ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন ওই তরুণ। একপর্যায়ে এ ঘটনায় ওই তরুণী গত বছরের ১৭ জুলাই সিলেট কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

এর প্রায় ৯ মাস পর ১৮ মে আবারও তিন হাজার টাকা দাবি করেন ওই তরুণ। এরপর তরুণী বাধ্য হয়ে আবার তাকে বিকাশের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা দেন। এরপরও ফেসবুক আইডি ফেরত না দিয়ে উল্টো ওই তরুণীর আত্মীয়স্বজনের কাছে টাকা দাবি করেন ওই তরুণ। এরপর বাধ্য হয়ে তাঁরা মামলা করেন।