অভিনেত্রী হিমুর লাশের সুরতহাল শেষে যা বলল পুলিশ

অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকলেও তার গলায় রশির দাগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুবৃহস্পতিবার রাতে অভিনেত্রীর লাশের সুরতহাল করেন উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক মাসুদা খাতুন। সুরতহাল শেষে তিনি এ তথ্য জানান।

মাসুদা খাতুন বলেন, হোমায়রা হিমুর পরিচিত দুজন তাকে হাসপাতালে এনেছিল। আমরা তাকে হাসপাতালেই পেয়েছি। এখানেই আমরা প্রাথমিকভাবে হোমায়রা হিমুর লাশের সুরতহাল করেছি। তার শরীরে কোনো আঘাত বা চিহ্ন ছিল না। তবে তার গলায় রশির দাগ পাওয়া গেছে। সম্ভবত তিনি আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর আসল কারণ চিকিৎসক বলতে পারবেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। সেই রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।

এর আগে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম বলেন, আত্মহত্যা নাকি হত্যা এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে আসল কারণ জানা যাবে। হিমুর বাবা-মা নেই। তার আত্মীয়স্বজনদের খবর দিলে তারা এখানে আসে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া শুক্রবার চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বাদ জুমা জানাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এর পর সন্ধ্যায় অভিনয়শিল্পী সংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অভিনয়শিল্পী হোমায়রা হিমু আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। আজ বিকাল ৪টা ৪৬ মিনিটে হিমুর একজন বন্ধু ও মিহির হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসেন। পৌঁছানোর পর উপস্থিত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হিমুর লাশ রেখেই পালিয়ে যায় অভিনেত্রীর সেই বন্ধু। পুলিশ মিহিরকে (অভিনেত্রীর মেকআপ আর্টিস্ট) সঙ্গে নিয়ে হিমুর সেই বন্ধুকে খুঁজছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালের ২৩ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলায় জন্ম হোমায়রা হিমুর। তিনি ইস্পাহানি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ইডেন মহিলা কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। মঞ্চনাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি প্রথম নাট্য জগতে প্রবেশ করেন। ফ্রেঞ্চ নামক নাট্য দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেন।

অসংখ্য টিভি নাটকে দেখা গেছে হিমুকে। ‘ছায়াবীথি’ নামের একটি নাটকের মাধ্যমে ২০০৬ সালে টেলিভিশন নাটকে তার অভিনয় শুরু। তার অভিনীত অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকের মধ্যে রয়েছে— ‘ডিবি’, ‘সোনাঘাট’, ‘চেয়ারম্যানবাড়ি’, ‘শোনে না সে শোনে না’, ‘বাটিঘর’, ‘কমেডি-৪২০’, ‘চাপাবাজ’, ‘অ্যাকশন গোয়েন্দা’, ‘ছায়াবিবি’, ‘এক কাপ চা’ অন্যতম। ২০১১ সালে ‘আমার বন্ধু রাশেদ’ সিনেমাতে অভিনয়ের মাধ্যমে বড়পর্দাতেও অভিষেক হয় তার।