কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মদিন আজ। প্রতি বছর এদিন রাত ১২টা ১ মিনিটে প্রিয়জনদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটতেন তিনি। সকাল হলে ভক্তরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেন প্রিয় লেখককে। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে পালিত হতো তার জন্মদিন। এবারও নানা আয়োজনে উদযাপিত হবে দিনটি। ক্ষণজন্মা এ কথাশিল্পীর ২০১২ সালে জীবন কেড়ে নেয় ক্যানসার। মুগ্ধ পাঠকের হৃদয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন তার ১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোনার কেন্দুয়ার কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজ। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার এক ভাই কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অন্য ভাই আহসান হাবীব কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক। হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে উপহার দিয়েছেন সাড়া জাগানো সব উপন্যাস। তৈরি করেছেন হিমু, মিসির আলীর মতো জনপ্রিয় চরিত্র। নির্মাতা হিসেবেও উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় নাটক এবং চলচ্চিত্র। বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।
হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষ্যে চ্যানেল আইয়ে সকাল সাড়ে ৭টায় প্রচার হবে সেরাকণ্ঠ ও খুদে গানরাজদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠান। বিকাল ৩টা ৫ মিনিট চ্যানেল আই চেতনা চত্বর থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে হুমায়ূন মেলা। বিকাল ৫টায় দেখানো হবে হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমা নয় নম্বর বিপদ সংকেত। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে প্রচার হবে রাজিয়া সুলতানা জেনির রচনা ও সালাহউদ্দিন লাভলুর পরিচালনায় বিশেষ নাটক আমি হুমায়ূন আহমেদ হতে চাই।
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি জানান, দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে হুমায়ূন আহমেদের জন্মগ্রাম কুতুবপুরে তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ। প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকালে হুমায়ূন আহমেদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন, আনন্দ শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
তিনি আরও জানান, প্রত্যন্ত পল্লি এলাকা কুতুবপুরে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় দীর্ঘকাল থেকে শিক্ষাবঞ্চিত ছিল এ এলাকার মানুষ। তাই হুমায়ূন আহমেদ তার মা আয়েশা ফয়েজের অনুরোধে এখানে এ স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ সালে মাত্র ৪৮ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ। বর্তমানে স্কুলটিতে ৩৪৮ ছাত্রছাত্রী এবং ১৮ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। ২০১৯ সালে বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত করে সরকার।
মন্তব্য