মৌলভীবাজারে রাতের অন্ধকারে টিলা কেটে মাটি বিক্রি, বিপর্যস্ত পরিবেশ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বিচারে ধ্বংস করছে প্রাকৃতিক পাহাড় টিলা। এতে বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য, ধংস হচ্ছে গাছপালা, পাখ-পাখালিসহ বন্য প্রাণীর আবাসস্থল। টিলা কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের কালিনগর এলাকায় ৫-৭টি টিলা থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা হলে শুরু হয় ট্রাক-ট্রাক্টরে টিলার মাটি পরিবহণের কাজ কারবার। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব টিলা থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে চড়া দামে বিক্রি করছে। মাটি পরিবহণে ব্যবহৃত অধিকাংশ ট্রাক-ট্রাক্টরের নেই বৈধ কাগজপত্র। চালকের নেই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স। রাতের আঁধারে উপজেলার বিভিন্ন নিচু এলাকায় ভিটা ভরাটের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রাকৃতিক টিলার এসব মাটি। এতে একদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ট্রাক-ট্রাক্টরের ভারে এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙ্গে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। ত্রুটিপুর্ণ যানবাহনের বিকট শব্দে ওই এলাকার জনসাধারণের রাতের ঘুমও মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। টিলা খেকোরা অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় নানা দুর্ভোগ স্বত্ত্বেও ভুক্তভোগীরা এ অত্যাচারের প্রতিবাদ করার সাহস পান না। সরেজমিনে উপজেলার কালিনগর ছাড়াও গোয়ালবাড়ি, পূর্বজুড়ী, সাগরনাল, ফুলতলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সরকারী-বেসরকারী টিলা থেকে প্রভাবশালীরা অবাধে মাটি কেটে নিতে দেখা গেছে। কালিনগর গ্রামের প্রবীণ মুরব্বি সোলেমান খান জানান, অবৈধভাবে টিলার মাটি কাটার প্রতিবাদ করায় টিলা খেকোরা তাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়েছে। নানা দুর্ভোগ স্বত্ত্বেও তাদের অত্যাচারের কেউ প্রতিবাদ করেন না। পাহাড়-টিলার মাটি কাটা বন্ধসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের প্রতি জোরালো দাবী জানিায়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এমএ মোঈদ ফারুক জানান, পাহাড় টিলা কাটা সম্পুর্ণ বে-আইনী। তা স্বত্ত্বেও এক শ্রেণীর লোক টিলা কাটছে। এব্যাপারে আইনগত ভাবে কঠোর ব্যবস্থা নিতে তিনি ইউএনও ও থানা পুলিশকে অনুরোধ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র বণিক জানান, ইতিপূর্বে পাহাড় টিলা কাটার অপরাধে পরিবেশ আইনে কয়েকজনকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা আরোপের পর তা আদায় করেন। ইদানিং বিভিন্ন সুত্রে টিলা কাটার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলাপ হয়েছে। অতি দ্রুত পরিবেশ আইনের ভিত্তিতে টিলা কাটা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।