শিরোপা অক্ষণ্ন রাখলো বসুন্ধরা কিংস

বসুন্ধরা কিংস যেখানে শুরু থেকে সফল, সেখানে সাইফ স্পোর্টিং এখনো শীর্ষ ছোঁয়ার রাস্তা খুঁজে পায়নি। কিংস যেখানে টানা তিন আসরে ফাইনাল খেলছে, সেখানে চারবারে সাইফ প্রথম। তবে ফাইনালের মঞ্চে নবীন সাইফ এদিন লড়াইটা করেছে সমানতালে। কখনো সেমিফাইনালে না ওঠা দলটি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে ফাইনালে বেশি সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু তাদের হতাশ করেছে ক্রসবার। কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকু দেয়াল হয়ে দাঁড়ান। কেনেথ, ফাহিম, রহমত মিয়াদের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে বসুন্ধরার ফেডারেশন কাপ জয়ে ভূমিকা রেখেছেন জিকু। তবে গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালের মূল নায়ক বসুন্ধরা কিংসের আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড রাউল অস্কার বেসেরা। তার একমাত্র গোলে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বন্ধ থাকা ফুটবল শুরুর পর প্রথম প্রতিযোগিতায় শিরোপার স্বাদ নিলো কোচ অস্কার ব্রুজনের দল। সাইফ এই টুর্নামেন্টের শুরু থেকে খেলছে গতিময় ফুটবল। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠায় তাদের জুড়ি ছিল না টুর্নামেন্টে জুড়ে। নাইজেরীয় কেনেথ ইকেচুকুর পায়ে গোল এসেছে। সেমিফাইনালের পর বসুন্ধরা চেয়ে একদিন বেশি বিশ্রাম পাওয়া দলটি কাল খেলেছেও চমৎকার। ম্যাচের শেষ ত্রিশ মিনিটে গোল করার মতো অন্তত তিনটি প্রচেষ্টা ছিল সাইফ স্পোর্টিংয়ের। সবগুলো আক্রমণই ধুলিস্যাৎ করেন জিকু। পুরো ম্যাচে অন্তত পাঁচটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন ফাইনালে সেরা হওয়া এই গোলরক্ষক। ম্যাচে আক্রমণের শুরুটা করেছিলো বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের ১৬তম মিনিটে জোনাথন ফার্নান্দেজের লং বল পেয়ে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে বিশ্বনাথের নেয়া জোড়ালো শট দারুণভাবে প্রতিহত করেন সাইফের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। কিংসের এই আক্রমণের পরই নিজেদের গুছিয়ে নেয় সাইফের রক্ষণ। রিয়াদুল, ইয়াসিন, সিরোজউদ্দিন ও রহমত মিয়া প্রতিহত করতে থাকেন কিংসের একের পর এক আক্রমণ। কিংসের আগের চার ম্যাচের তিনটিতে সেরা হওয়া জোনাথন ফার্নান্দেজও জায়গা পাচ্ছিলেন না বল যোগানের। সাইফের বেলজিয়াম কোচ পল পুটের কৌশলে বার বার যেন মার খাচ্ছিলো অস্কার ব্রুজনের ট্যাকটিস। এদিন ম্যাচের ১৮তম মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় সাইফ। জন ওকোলিকে দারুণ থ্রু বাড়ান কেনেথ। কিন্তু এই নাইজেরিয়ানের দূরপাল্লার শট পোস্টের উপর দিয়ে যায়। পরের মিনিটে ওকোলির পাস ধরে দ্রুত বক্সে ঢুকে জোড়ালো শট নেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। জিকো দারুণভাবে প্রতিহত করেন তা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বক্সের ঠিক বাম দিক থেকে রহমত মিয়া’র নিচু ফ্রি-কিক শুয়ে পড়ে ফেরান জিকো। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে রহমত মিয়ার দূরপাল্লার শট ক্রসপিসে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৫২তম মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করেন রাউল অস্কার বেসেরা। জোনাথন ফার্নান্দেজের ক্রসে দুই ডিফেন্ডারের মাঝদিয়ে সাইফ কিপার পাপ্পুকে পরাস্ত করেন এই আর্জেন্টাইন। এরপরের আক্রমণগুলো শুধুই সাইফের। ৭৩তম মিনিটে জন ওকোলির বাড়ানো বলে কেনেথের শট অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। ৮৬তম মিনিটে রহমত মিয়ার ক্রসে আবারো কেনেথের প্রচেষ্টা নস্যাৎ করেন জিকু। পরের মিনিটে আবারো কিংসের ত্রানকর্তা জাতীয় দলের এই গোলরক্ষক। ম্যাচের ৮৮তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। রবসনের কাটব্যাকে বেসেরার শট কর্নারে রক্ষা করেন সাইফের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। এটি তিন মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসের চতুর্থ শিরোপা। এর আগে ২০১৮ সালের প্রথম ফেডারেশন কাপে আবাহনীর কাছে ৩-১ গোলে হেরে রানার্সআপ হয় তারা। ওই বছরই লীগ ও স্বাধীনতা কাপ জেতে নবাগত ক্লাবটি। গত মৌসুমে ফেডারেশন কাপও জিতে নেয় বসুন্ধরা কিংস।