রাজনগরের ইটা চা বাগানে ২দিন থেকে চলছে শ্রমিক ধর্মঘট

রাজনগর প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের রাজনগরে ইটা চা বাগানে দশম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুর রহিমের মৃত্যু নিয়ে ওই বাগান এবং উদনা ফাঁড়ি বাগানে চলছে ধর্মঘট। গত দুই দিন থেকে ধর্মঘট চললেও বিষয়টি নিষ্পত্তির তেমন কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। রবিবার উভয় বাগানের ২৫শ‘রও বেশি শ্রমিক ধর্মঘট পালন করে। এদিকে শ্রমিকরা বলছে রবিবার (আজ) সন্ধ্যার মধ্যে বিষয়টির সমাধান না করলে তারা আরো কঠোর কর্মসূচি দেবেন। এছাড়াও গত শনিবার ১২টার মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিষয়টির নিষ্পত্বি করবেন বলে শ্রমকিদেও জানালেও তিনি (ইউএনও) বাগানে না যাওয়ায় রবিবারও শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ইটা চা বাগানের আব্দুল আজিজের ছেলে আব্দুর রহিমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে রাজনগর থানা পুলিশ। একই বাগানের ৫নং সেকশনের মাসুদ মিয়ার মেয়ে ইয়াছমিন আক্তারের সঙ্গে আব্দুর রহিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এজন্য এটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবী করে তার পরিবার। ঘটনার পরপরই মাসুদ মিয়া ও তার ভাইয়েরা সকলেই পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর বাগানের ১২শ শ্রমিক বিক্ষোভ ও ১ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিকদের দাবী ছিল মসুদ মিয়ার পরিবার যেহেতু বাগানের বাহিরের লোক সেহেতু তাকে বাগান থেকে বের করে দিতে হবে। বাগান কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলেও এনিয়ে কোন সমাধান হয়নি। দাবী আদায় না হওয়ায় গত ৭ সেপ্টেম্বর বাগানের শ্রমিকরা আবারো ধর্মঘট করে। এ সময় বিষয়টি এক সাপ্তাহের মধ্যে সমাধান করা হবে বলে প্রশাসন, পুলিশ ও বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের আবারো আশ্বস্ত করে। কিন্তু ওই সময়েও তা সমাধান না হওয়ায় শনিবার সকাল থেকে বাগানের শ্রমিকেরা অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেয়। রবিবার ইটা চা বাগান ও উদনা ফাঁড়ি চা বাগানের ২৫০০ বেশি শ্রমিক ধর্মঘট পালন করে। শ্রমিকদের দাবী ‘বহিরাগতকে বাগান থেকে উচ্ছেদ না করা পর্যন্ত তারা ধর্মঘট চালিয়ে যাবে। এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৗসি আক্তার বিষয়টি সমাধানের জন্য সবাইকে নিয়ে বসবেন বলে শ্রমিকদের জানানো হয়েছে। ইটা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি নাসিম আহমদ বলেন, শ্রমিকরা দাবি করছে- যেহেতু মসুদ মিয়ার পরিবার বহিরাগত। সেহেতু তাকে বাগান থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। কয়েকবার সমাধানের আশ্বাস দিয়েও দাবী মানা হয়নি বলে শ্রমিকরা ধর্মঘট করছে। ইটা চা বাগানের ম্যানেজার ফারুক আহমদ চৌধুরীর মোবাইলে ফোন করলে তিনি ব্যস্ত আছেন পরে ফোন করবেন জানালেও এবিষয়ে পরে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌসি আক্তার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মামা অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় শনিবার যাওয়া যায়নি। রবিবার সন্ধ্যায় শ্রমিকদের নিয়ে বসে সমাধান করা হবে।