দফায় দফায় বৈঠকেও চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। মালিকপক্ষ আংশিক মজুরি বৃদ্ধি করতে চাইলেও শ্রমিকরা তাদের দাবিতে অনড় রয়েছেন।
এ অবস্থায় এখনো (বৃহস্পতিবারও) আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন চা শ্রমিকরা। বাগানে বাগানে করছেন বিক্ষোভ, মিছিল ও কর্মবিরতি।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, বুধবার তারা শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চা সংসদ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান হয়নি। মালিকপক্ষ ২০ টাকা বাড়িয়ে ১৪০ টাকা দৈনিক মজুরি দিতে চাচ্ছেন। তারা তা মানেননি। তাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।
দাড়াগাঁও চা বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েতের সভাপতি প্রেমলাল আহির জানান, দৈনিক তাদের ২৪ কেজি পাতা সংগ্রহ করতে হয়। এর বিনিময়ে তারা ১২০ টাকা পান। এর অতিরিক্ত প্রতি কেজির জন্য ৪ টাকা ৫০ পয়সা করে দেওয়া হয়। আর কম হলে প্রতি কেজিতে ৫ টাকা করে কর্তন করা হয়।
তিনি বলেন, একেকজন শ্রমিক বর্তমান মৌসুমে দৈনিক ৫০ থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত চা তুলতে পারেন। কিন্তু মৌসুম ছাড়া টার্গেটই অর্জন করা যায় না। এখন তাদের মজুরি বৃদ্ধি না করলে তারা চলতে পারবেন না। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই তারা দাবি পূরণের লক্ষ্যে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি বলেন, কোম্পানির ক্ষতি হচ্ছে সেটি আমরা বুঝি। কিন্তু আমাদের পেটে যদি ভাত না পড়ে তা হলে আমরা কর্ম করব কি করে। তা ছাড়া পাতা যদি বড় হয়ে যায় তা হলে চাও ভালো হয় না।
চা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত বাগানে চা উত্তোলন হয় ৯ মাস। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি চা উত্তোলন বন্ধ থাকে। মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চা উত্তোলন করা সম্ভব হয়। তবে পূর্ণ মৌসুম জুন, জুলাই ও আগস্ট। এ তিন মাসে বছরের প্রায় ৪০ শতাংশ চা উৎপাদন হয়। চলতি বছর দেশের ১৬৭ চা বাগানে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০০ মিলিয়ন কেজি। গত বছর (২০২১ সালে) চা উৎপাদন হয় ৯৬.৫১ মিলিয়ন কেজি।
মন্তব্য