‘এই ট্রফি আমাদের সোনালি দিন ফেরাবে’

টুর্নামেন্টের শুরুতে আফগানিস্তানের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া শ্রীলঙ্কাই জিতে নিলো এশিয়া কাপ। বিশ^ শুনলো একদল তরুণ সিংহের গর্জন। সাবেক লঙ্কান ক্রিকেটার ফারভেজ মাহরুফ বলেছেন, ‘আমাদের ইয়াং লায়নদের বীর হিসেবেই বরণ করে নেবো।’ অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণে এবার ঘরের মাটিতে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ফাইনালে লঙ্কানদের জয়ের নায়ক ভানুকা রাজাপাকসে বলেন, ‘আশা করি, ট্রফিটা আমাদের দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে।’ আর অধিনায়ক দাসুন শানাকা বলেন, ‘এই অর্জন আমাদের ক্রিকেটের সোনালি দিন ফেরাবে।’ বিশ^কাপেও এই ব্র্যান্ডের ক্রিকেট জারি রাখতে আত্মবিশ^াসী শ্রীলঙ্কা। ম্যাচসেরা হওয়া ভানুকা রাজাপাকসে বলেন, ‘বিশ^কে আমাদের আগ্রাসন দেখিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। এক দশক আগেও আমাদের দলে আগ্রাসন ছিল। আমরা চেয়েছিলাম সেটি ফিরিয়ে আনতে। বিশ^কাপেও আমরা এই মোমেন্টাম ধরে রাখতে চাই। দেশে যে সংকট চলছে তাতে শ্রীলঙ্কার প্রতিটি মানুষই কষ্টে আছে। কঠিন এই সময়ে তাদের মুখে একটু হলেও হাসি ফেরাতে পারবো বলে আমাদের এই অর্জন পুরো জাতির, যার জন্য তারা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছে।’ অধিনায়ক শানাকা বলেন, ‘অনেক বাজে ব্যাপারই ঘটেছে অতীতে। তবে ক্রিকেটার হিসেবে কখনোই নেতিবাচক বিষয়গুলোকে পাত্তা দেয়া উচিত না। তাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও আজেবাজে বলা অনুচিত। একটা জিনিসই দরকারÑ বিশ^াস। বিশ^াসই সবকিছু। অধিনায়ক হিসেবে আমি সবসময় আমার খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রেখেছি। তিন বছর ধরেই দলটা ভালো ক্রিকেট খেলছে। শুধু উইনিং ফ্যাক্টরগুলো ছিল না। আশা করি এটা হবে আমাদের ক্রিকেটের ঘুরে দাঁড়ানোর পালা।’ একেবারে অনভিজ্ঞ পেস অ্যাটাক নিয়ে এশিয়া কাপে খেলতে আসে শ্রীলঙ্কা। দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ বোলার বলতে গেলে লেগস্পিন অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় বাঁহাতি পেসার দিলশান মদুশঙ্কের। ফাইনালে ৪ উইকেট নেয়া প্রমোদ মদুশানের এটি ছিল মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ। এছাড়া চামিকা করুণারত্নের তেমন একটা অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু চাপের মুহূর্তে কী অসাধারণ বোলিংই না করলেন তরুণ পেসাররা! স্পিনার মহেশ থিকসানাও খুব বেশি দিন হয়নি দলে এসেছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় এই রহস্য স্পিনারের। এশিয়া কাপে ৭-এর নিচে ইকোনমি রেট বজায় রেখে বল করেছেন তিনি। থিকসানাকে হাতখুলে খেলার সাহস করেনি কেউই। পাকিস্তানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর লঙ্কান কোচ ক্রিস সিলভারউড দলের বোলারদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দলের ট্যালেন্টে আমার ভরসা ছিল। খুবই তরুণ একটা সিম অ্যাটাক নিয়ে এসেছিলাম। তাদের পারফর্ম করতে দেখাটা সত্যিই অসাধারণ ব্যাপার। এই অর্জন একজনের নয়, পুরো টিমের প্রচেষ্টায় পাওয়া।’ পেসার চামিকা করুণারত্নে বলেন, ‘৭ বছর পর জিতলাম। আমরা একটা ভিন্ন দল। তারুণ্যে ভরপুর। খুবই ভালো লাগছে। আমরা লড়াই করে গিয়েছি এবং নিজেদের সেরাটা দিয়েছি। খেলোয়াড়রা তাদের সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। আফগানিস্তানের কাছে হারের পর সবাই তাদের সবটুকু নিংড়ে দিতে চেয়েছিল।’বিশ^াস আমাদের।