কোহিনূর বেগম (২২), পেশায় ভিক্ষুক। প্রতিদিন শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন ও আশপাশের এলাকায় ভিক্ষা করে বেড়ান। তার সঙ্গে গত ৯ সেপ্টেম্বর রেলওয়ে স্টেশনে পরিচয় হয় ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানার শাহপুর ঘিঘাটি এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে শিমুল হোসেন (২৫) ও একই এলাকার মৃত আবু কালামের মেয়ে ইয়াসমিন বেগমের (২৪)।
তারা কোহিনূরকে খাবার খাইয়ে ও তাকে বোন বানিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কোহিনূর তার তিন মাসের মেয়েকে নিয়ে পরদিন (গত ১০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ভিক্ষা করছিলেন শহরের কালীঘাট রোডের কড়ইগাছ তলার রিকশাস্ট্যান্ড এলাকার আশপাশের দোকানগুলোতে।
এমন সময় কোহিনূরের কোলের শিশু বাচ্চাকে আদর করার কথা বলে ওই দুই আগন্তুক বাচ্চাকে তাদের কোলে নেয়। বাচ্চাটিকে কিছুক্ষণ আদর করার পর দুই আগন্তুক হঠাৎ দৌড় দিয়ে শিশু বাচ্চাটিকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এদিকে কোহিনূর ও তার স্বামী শহীদ আলী শিশু বাচ্চাকে হারিয়ে পাগরপ্রায় হয়ে যান।
পরে দৈনিক করতোয়া শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি নূর মোহাম্মদ সাগর ও যুগান্তরের এই প্রতিবেদক সৈয়দ সালাউদ্দিন এ ঘটনা জানতে পেরে অনেক খোঁজাখুঁজি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণের পর দুই শিশু অপহরণকারীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। এদিকে সৌভাগ্যক্রমে পরদিন দুই শিশু আপহরণকারী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে সন্দেহজনক ঘোরাফেরার কারণে আটক হয়।
এ সময় সংবাদকর্মী সাগরের ফেসবুকে লাইভ ও অপহরণকারী শিমুলের মোবাইল ফোনে কালীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে যায়। পরে শ্রীমঙ্গল থানায় কোহিনূরের স্বামী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করলে অফিসার ইনচার্জ শামীম অর রশীদ তালুকদার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলাউদ্দিন, সঙ্গীয় ফোর্স, কোহিনূর ও তার স্বামীকে কালীগঞ্জ থানায় পাঠান। সেখান থেকে শিশু বাচ্চাকে উদ্ধার করে আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক শ্রীমঙ্গল থানায় মঙ্গলবার সকালে নিয়ে আসেন।
কোহিনূর নরসিংদী জেলার বেলাবো থানার ধুকুন্দি এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্রীমঙ্গল কালীঘাট রোডের শাহেনা আক্তারের বস্তিতে থাকেন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ শামীম অর রশীদ তালুকদার বলেন, আসামিরা শিশু পাচারকারী দলের সদস্য। জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের সঙ্গে কারা কারা জড়িত রয়েছে তা বের করা হবে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য