পাকিস্তানের কাছে হার সাকিবদের

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৩৪ রানের পুঁজি নিয়ে ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। পরে একই মাঠে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানের ম্যাচে দু’দলেরই স্কোর ছিল ৩০০ ছুঁই ছুঁই। এমন উইকেটে গতকাল টসে জিতে ব্যাটিংই নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মাত্র ১৯৩ রানে অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। ব্যাটিং-বান্ধব পিচে এটি মামুলি টার্গেটই। স্বাগতিকরা সহজেই পেরিয়ে যায় টার্গেট। এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বে প্রথম ম্যাচে প্রথম হার দেখলো বাংলাদেশ। গতকাল লাহোরে ৭ উইকেটে জয় পায় পাকিস্তান। এদিন ‘পুরনো ভূত’ ভর করে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ওপর। বাজে শটে উইকেট খোয়ান বাংলাদেশের শীর্ষ প্রথম পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এমন অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বড় পুঁজি গড়া সহজ নয়। বাস্তবে তা হয়ওনি। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমরা কিছু অরডিনারি শট খেলেছি এবং শুরুতে কয়েকটি উইকেট হারিয়েছি। এমন ভালো উইকেটে শুরুর ১০ ওভারে চার উইকেট খোয়ানো উচিৎ হয়নি। কিন্তু এটা ঘটে। আমাদের জুটিটা ভালো ছিল (মুশফিুকের সঙ্গে সাকিবের) তবে মনে হয় আরও ৭-৮ ওভার দীর্ঘ হওয়া দরকার ছিল। এমন দারুণ পিচে এটা ছিল আমাদের খুবই বাজে ব্যাটিং প্রদর্শনী তবে আমাদের পরের ম্যাচের দিকে এসাকিব বলেন, ‘তারা (পাকিস্তান) এক নম্বর দল। তাদের তিনজন ওয়ার্ল্ড ক্লাস বোলার আছে যারার তাদের জন্য কাজ সহজ করে দেন। আমরা বোলিংটা ভালো করছি। কিন্তু ব্যাটিং আজ ভালো তো কাল মন্দ। আমাদের ধারাবাহিক হতে হবে। আমি মনে করি আমাদের তিন পেসার দুর্দান্ত বল করেছে। পাকিস্তানের মতো আমাদের পেসাররাও গত কয় বছর ধরে ভালো করছে। কিন্তু এমন পিচে ব্যাটসম্যান ভুল না করলে উইকেট পাওয়া যায় না।

বাংলাদেশ পরের দুই ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে। সেখানে ভালো করার আশা টাইগার অধিনায়কের। সাকিব বলেন, ‘(শ্রীলঙ্কায়) যখন এলপিএল খেলেছি, পিচগুলো মন্থর ছিল, উইকেটে চরাই-উৎরাই ছিল এবং সেটা আমাদের সাহায্য করবে বলে বিশ্বাস। আশা করি কলম্বোতে ভালো করবো আমরাগতকাল প্রথম পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে এসে প্রথম সাফল্যের দেখা পায় টাইগার বোলাররা। ৯.১তম ওভারে শরীফুল ইসলামের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন ফখর জামান। বাঁহাতি টাইগার পেসারের ফুললেংথ বলে ফ্লিকের চেষ্টায় ব্যাটে বলে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ লাহোরের ‘লোকাল বয়’। প্যাডে আঘাত করলে আঙুল তোলেন আম্পায়ার ল্যাংটন রুজের। ফখর রিভিউ নিয়েছিলেন, কিন্তু কাজে আসেনি সেটি। 

১৬তম ওভারে এসে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার বাবর আজমকে বড় ইনিংস খেলতে দেয়নি সাকিবের দল। টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদের বলে সরাসরি বোল্ড হন বাবর আজম। ফুলার লেংথ বল বাবর যেমনটি ভেবেছিলেন ততটা ওঠেনি। এতে ব্যাটের নিচের দিকে লাগলেও বল ঢুকে যায় স্টাম্পে। পাকিস্তান অধিনায়ক আউট হন ২২ বলে ১৭ রানম্যাচে তিন তিনবার প্রসন্ন ‘রিভিউ ভাগ্য’ নিয়ে এদিন অর্ধশতক পূর্ণ করেন ইমাম উল হক। ৮৪ বলে ৭৮ রান করেন পাকিস্তানি ওপেনার। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তার ১৯তম অর্ধশতক। এদিন দুবার তার বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে অসফল থাকে বাংলাদেশ। আর তৃতীয় দফায় রিভিউয়ে নিজেই সফল ইমাম। 

১০.৫তম ওভারে হাসান মাহমুদের বলে এলবিডব্লিউর আবেদন হয় ইমাম উল হকের বিপক্ষে। আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু বল ট্র্যাকিং দেখায় বল পড়েছে লেগ স্টাম্পের বাইরে। এতে রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। ১৩.২তম ওভারে দ্বিতীয় রিভিউ হারায় সাকিবরা। এবারও ইমাম উল হকের বিপক্ষে। এবার দ্বিধা ছিল হয়তো সাকিবের। একটু দেরিতে রিভিউ নেন সাকিব। কিন্তু বল ট্র্যাকিং দেখায় তাসকিনের করা বল পড়েছে লেগ স্টাম্প লাই১৯তম ওভারে আবারও বেঁচে যান ইমার। প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এসে ইমামের বিপক্ষে এলবিডাব্লিউর জোরালো আবেদন করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আম্পায়ার আহমেদ শাহ পক্তিন আউট দিয়েছিলেন, কিন্তু এবার রিভিউ নেন ইমাম। বল ব্যাটে লাগেনি, মিরাজের অফ স্পিন স্বাভাবিকভাবেই পড়েছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। কিন্তু বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, বল মিস করে যেত লেগ স্টাম্প। এতে আবারও বেঁচে যান ইমাম উল হক। তবে শেষ পর্যন্ত ইমামকে সাজঘরের পথ দেখান মিরাজই। ৩৩তম ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন ইমাম। টাইগার অফস্পিনারের ফুলার ডেলিভারি ভেতরে ঢোকার মুখে স্লগ সুইপ খেলতে যান পাক ওপেনার। ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। তবে ততক্ষণে ১৫৯/৩ সংগ্রহ নিয়ে অনেকটাই নিরাপদে ছিল পাকিস্তান।